কিভাবে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলবো

কিভাবে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলবো এ বিষয়ে নিয়ে যদি আপনার মনে প্রশ্ন থাকে তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। কেননা ইউটিউবে ক্যারিয়ার দাঁড় করানোর জন্য সর্বপ্রথম একটি ইউটিউব চ্যানেলের প্রয়োজন হয়। কিভাবে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলবো এ ব্যাপারে চলুন আমরা জেনে নিই। আর আপনি যদি কিভাবে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলবো এ ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ ধারণা নিতে চান তাহলে এই পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে চাইলে এবং ইউটিউবে নিজের ক্যারিয়ার দাঁড় করাতে চাইলে একটি প্রফেশনাল মানের YOUTUBE চ্যানেল প্রয়োজন। কারন আপনার চ্যানেল যদি প্রফেশনাল মানের না হয়ে থাকে তাহলে সেই চ্যানেল নিয়ে বেশি দূর আগানো সম্ভব নয়। আসুন আমরা জেনে নেই কিভাবে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলবো বা ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হয়:

নিশ/কেটাগরি নির্ধারণ:

ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা আর চিন্তা মাথায় আসলে আপনি যে ক্যাটাগরির ভিডিও তৈরি করবেন সেই ক্যাটাগরি আগে নির্ধারণ করতে হবে। কারণ আপনার এই ক্যাটাগরি বা নিস যদি নির্ধারণ না হয় তাহলে এই চ্যানেলটি কখনোই সামনে আগাবে না এবং বেশি অডিয়েন্সদের কাছে পৌঁছাবে না। তাই আপনি যদি ঘুরতে বেশি পছন্দ করেন তাহলে ভ্লগ , গান গাইতে পছন্দ করলে মিউজিক ক্যাটাগরি এবং আপনার দৈনন্দ জীবন যাত্রার বিষয়গুলি তুলে ধরতে লাইফ স্টাইল ক্যাটাগরি, এভাবেই আপনার নিস টি নির্ধারণ করবেন। 

নাম নির্ধারণ:

আপনি নিস নির্ধারণের পর যে কাজটি করতে হবে সেটি হচ্ছে আপনার চ্যানেল এর নাম নির্ধারণ করতে হবে। চ্যানেলে এর নাম নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরী আমরা অনেক সময় অনেক ধরনের ভুল করে থাকি ইউটিউব চ্যানেলের নাম নির্ধারণের সময়। ইউটিউব চ্যানেলের নাম নির্ধারণের সময় বেশি বড় নাম রাখার প্রয়োজন নেই ,মধ্যম ধরনের বা খুব ছোট এমন অর্থবোধক বা অর্থবহ নাম হলে খুবই ভালো হয়। 

লগো তৈরি:

নাম নির্ধারণের পর আপনার YOUTUBE চ্যানেল এর জন্য একটি প্রফেশনাল মানের লোগো তৈরি করতে হবে। কারণ একটি লোগো একটি চ্যানেল এর জন্য খুবই জরুরী এই লগই পারবে একটি চ্যানেল এর ব্যান্ড ভ্যালু বাড়াইতে। একটি চ্যানেল কতটা প্রফেশনাল তা এই লোগো দেখলেই বোঝা যায়। তাই লোগো তৈরির ক্ষেত্রে আমাদের বিশেষ নজর রাখা প্রয়োজন। 

Youtube ব্যানার তৈরি:

আমরা সাধারণত লোগো এর পিছনে যেই ছবি যুক্ত করার ফাঁকা অংশটি দেখি সেটিকে ইউটিউব ব্যানার বলে থাকি। একটি ইউটিউব ব্যানার যুক্ত করার ফলে ইউটিউব চ্যানেলের সৌন্দর্য শতগুণ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। তাই ইউটিউব চ্যানেলের সৌন্দর্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ইউটিউব ব্যানার এর বিকল্প কিছু হতে পারে না। 


উপরোক্ত বিষয়ে বলি আপনার প্রস্তুত করা হয়ে গেলে এখন একটি প্রফেশনাল মানের ইউটিউব চ্যানেল খোলার পালা, আসুন জেনে নি কিভাবে একটি প্রফেশনাল মানের ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হয়।

কিভাবে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলবোঃ

প্রথম ধাপ:

আপনি যে নামে ইউটিউব চ্যানেলটি তৈরি করতে চাচ্ছেন সেই নামে একটি জিমেইল আইডি তৈরি করতে হবে। এবং জিমেইল একাউন্ট তৈরি করার পর সচরাচর সেই একাউন্টের আন্ডারে একটি ইউটিউব চ্যানেল অটোমেটিক তৈরি হয়ে যায়। কিভাবে GMAIL একাউন্ট তৈরি করতে হয় জানুন

দ্বিতীয় ধাপ:

আপনার কাঙ্খিত জিমেইলটি ইউটিউবে লগইন করবেন। এবং তারপর আপনার ইউটিউবের এড কোনায় আপনার জিমেইল এর লগো বা আইকন দেখতে পাবেন সেখানে চাপ দেওয়ার সাথে সাথে আপনার কাছে বেশ কিছু অপশন দেখাবে। 


তারপর এই অপশন গুলো এর মধ্যে থেকে Create a Channel এই অপশনে চাপ দিবেন দেওয়ার পর আপনার সামনে নতুন একটি ইন্টারফেস শো হবে। 


তারপর এই অপশনগুলো থেকে আপনার ক্যাটাগরি অনুযায়ী যে নামটি নির্ধারণ করেছিলেন সে নামটি এখানে দিবেন। আর Handle এর স্থলে আপনি আপনার ইউজার নেম এর মত একটি শর্টকাট নেম দিবেন যা আপনার ইউটিউব চ্যানেলের লিংকের সাথে যুক্ত হবে। তারপর ক্রিয়েট চ্যানেল এ চাপ দেওয়ার সাথে সাথেই আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি প্রস্তুত হয়ে যাবে। 

তৃতীয় ধাপ:

আপনার চ্যানেলটি প্রস্তুত হওয়ার পর সেই ব্রাউজারের কর্নায় আপনার চ্যানেলের লোগো থেকে ক্লিক দেওয়ার পর YOUR CHANNEL অপশনে চাপ দিলে আপনার চ্যানেলটি ওপেন হবে, অথবা ক্রিয়েটোর স্টুডিও অপশানে ক্লিক দিয়ে CREATOR STUDIO ওপেন করে আপনার চ্যানেলকে কাস্টমাইজেশন করতে হবে। 

Customization অপশনে ক্লিক দেওয়ার পর চ্যানেল কাস্টমাইজেশন এর অপশন গুলো আপনার সামনে শো হবে। পড়লে-আউট অপশন থেকে আপনার চ্যানেল এর টেলার ভিডিও এবং ফিশার ভিডিও এড করতে পারবেন। এবং ফিচার সেকশন থেকে আপনার ভিডিওগুলো এড করতে পারবেন সেখানে আপনি আপনার শর্ট ভিডিও অথবা ভাইরাল ভিডিও আলাদা আলাদা সেকশন করে এড করতে পারবেন। 

চতুর্থ ধাপ:

তারপর বেসিক ইনফো BASIC INFO অপশন থেকে আপনি আপনার চ্যানেলের নাম পরিবর্তন করতে পারবেন এবং আপনার চ্যানেল এর যে কাস্টম লিঙ্ক এর ইউজার নেম রয়েছে সেটি পরিবর্তন করতে পারবেন তবে এক্ষেত্রে একটি শর্ত প্রযোজ্য আপনি যদি একবার এটি পরিবর্তন করে থাকেন তাহলে ১৪ দিন পর আবার সেটি পরিবর্তন করতে পারবেন। 


এবং আপনি আপনার চ্যানেলের কিছু ডেসক্রিপশন এখানে লিখতে পারবেন গুলো আপনার চ্যানেল এ সার্চ রেংকিং এর ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে। 

তারপর চ্যানেল ইউ আর এল থেকে আপনি আপনার চ্যানেলের লিংক পরিবর্তন করতে পারবেন এবং লিংকস নামের যে অপশনটি রয়েছে সেই অপশন থেকে আপনি আপনার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার লিংক গুলো এড করতে পারবেন যা আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ব্যানার সেকশনে শো করবে। আর মনে রাখতে হবে প্রত্যেকটা তথ্য যুক্ত করার পর আপনাকে পাবলিশ অপশনে চাপ দিতে হবে এবং সেটিকে আপডেট করতে হবে । 


এবং ব্র্যান্ডিং অপশন থেকে আপনি আপনার চ্যানেলের লগো এবং ইউটিউব ব্যানার পরিবর্তন করতে পারবেন এছাড়াও এখানে তিন নাম্বার অপশনে যে রয়েছে ওয়াটার মার্ক সেখানে আপনি আপনার চ্যানেলের লোগো এর মাধ্যমে আপনার ভিডিও বা কনটেন্টে ওয়াটার মার্ক দিতে পারবেন। 

পঞ্চম ধাপ:

এই ধাপে আপনি আপনার চ্যানেল এর ড্যাশবোর্ড থেকে সেটিং অপশনে যাবেন তারপর সেটিং অপশনে চাপ দেওয়ার পর আপনার কাছে একটি ইন্টারফেস শো হবে। 


এই অপশন থেকে চ্যানেল এ গিয়ে আপনি আপনার দেশ সিলেক্ট করবেন এবং আপনার চ্যানেল সম্পর্কিত কিছু কিওয়ার্ড দিবেন যেগুলো আপনাকে সার্চ রেংকিং এ আপনার চ্যানেল এর ইম্প্রেশন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। 
এবং তারপর অ্যাডভান্স সেটিং এর অপশনে গিয়ে আপনি আপনার চ্যানেল যদি ছোট বাচ্চাদের জন্য তৈরি করে থাকেন তাহলে Yes This Channel as Made for Kids অপশনের চাপ দিবেন আর যদি আপনার চ্যানেলটি বাচ্চাদের জন্য তৈরি করা না হয়ে থাকে তাহলে No This Channel as not Made for Kids অপশনের চাপ দিবেন। তারপর আপনি সেভ অপশনে চাপ দিয়ে সেটিকে আপডেট করে নিবেন। 


এরপর ফিউচার ইলিজিবিলিটি অপশনে গিয়ে আপনার চ্যানেলটি আপনার নাম্বার এবং Gmail দিয়ে ভেরিফিকেশন কমপ্লিট করবেন যেটি আপনি আপনার চ্যানেল সিকিউরিটির জন্য ব্যবহার করে থাকবেন। কিভাবে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলবো আশা করছি এই ব্যাপারে আর কোন প্রশ্ন নেই। 
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url