টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায়
টেস্টোস্টেরন হরমোন এই সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জেনে থাকবেন আবার অনেকেই জানেন না।তবে যারা এ বিষয়ে জানেন তাদেরকে অগ্রিম ধন্যবাদ এবং যারা জানেন না তাদের বিবেচনায় থাকছে আজকের আলোচনা। টেস্টোস্টেরন হরমোন কি এবং এটি কিভাবে বৃদ্ধি করতে হয় এ সম্পর্কিত বিষয়ে জ্ঞান থাকা জরুরী। কেননা আপনি যদি টেস্টোস্টেরন হরমোন কি এবং এ হরমোন এর কাজ কি এ বিষয় সম্পর্কে যদি না জানেন তাহলে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জেনে কি করবেন?
তাই টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জানার আগে টেস্টোস্টেরন হরমোন কি এবং এ হরমোন মানব জীবনে প্রভাব কেমন বা টেস্টোস্টেরন হরমোন আমাদের শরীর এর কোন কার্যক্রমে ব্যবহৃত হয় এ বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। তাই চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে আমরা আজকের আলোচনার বিষয় কি এবং কোন কোন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব এর সূচিপত্রটি দেখে নিই।আর আপনি টেস্টোস্টেরন সংক্রান্ত সকল বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আলোচ্য বিষয়ঃ
- টেস্টোস্টেরন হরমোন কি
- কি খেলে পুরুষ হরমোন বৃদ্ধি পায়?
- টেস্টোস্টেরন হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়?
- টেস্টোস্টেরন হরমোন এর স্বাভাবিক মাত্রা কত?
- ব্যায়াম করলে কি টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ে?
- বৃদ্ধ বয়সে টেস্টোস্টেরন হরমোন এর মাত্রা হওয়া উচিত
টেস্টোস্টেরন হরমোন কি
টেস্টোস্টেরন হরমোন হলো এমন এক ধরনের উপাদান যা পুরুষের যৌন হরমোন এবং এটি পুরুষে থাকা এক ধরনের এন্ড্রোজেন। আর এর হরমোন পুরুষের প্রজনন টিস্যু যেমন অন্ডকোষ অথবা প্রস্টেটের বৃদ্ধি বা বিকাশ এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন পেশী কিংবা হার পোস্ট চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই ইতিমধ্যে আপনি বুঝতে পেরেছেন টেস্টোস্টেরন হরমোন কি এবং এটি আমাদের শরীরে কি কি কাজে লাগে।
কি খেলে পুরুষ হরমোন বৃদ্ধি পায়?
চলুন আমরা এ পর্যায়ে আলোচনা করার চেষ্টা করি যে কি কি খেলে পুরুষের হরমোন বৃদ্ধি পায় বা টেস্টোস্টেরন হরমোন এর মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য কি কি খাবার খাওয়া প্রয়োজন। টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির জন্য তেল যুক্ত মাছ বোয়াল, রুই, কাতলা, ইত্যাদি ধরনের মাছ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন কেননা এই মাছগুলোতে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এর পাশাপাশি চিতলের মাছ খাওয়ার অভ্যাস ও গড়ে তুলতে পারেন। জিংক আমাদের শরীরের টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির জন্য বেশ কার্যকরী।
আরো পড়ুনঃ দাঁত ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নিন
জিং টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে তাই কুমরার বীজ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন কেননা কুমড়ার বীজে প্রচুর পরিমাণ জিং থাকে। এছাড়া জিং যুক্ত আরো একটি উপাদান হচ্ছে আদা। আদাতে প্রচুর পরিমাণ জিংক থাকে তাই নিয়ম করে প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ আদা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাহলে প্রাকৃতিক উপায়ে আপনি আপনার শরীরের টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবেন।
টেস্টোস্টেরন হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়?
প্রত্যেকটি জিনিসের ভারসাম্য থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আপনি যদি কোন জিনিসের ব্যালেন্স রক্ষা করতে না পারেন সে ক্ষেত্রে সে জিনিসের ভয়ানক অবস্থা ও তত বেশি হতে পারে। টেস্টোস্টেরন হরমোন যেমন মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী তেমনই এ হরমোন অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধির পেতে থাকলে আমাদের শরীরের জন্য ঝুঁকিও হতে পারে। তাই চলুন জানা যাক টেস্টোস্টেরন হরমোন অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পেলে আমাদের কি কি ক্ষতি হতে পারে বা কি হতে পারে। যেহেতু টেস্টোস্টেরন হরমোন আমাদের পেশিকে আরও বেশি সুগঠিত করে ।
বিভিন্ন কার্যকলাপের ক্ষেত্রেও টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষয় হয়। তবে যদি অস্বাস্থ্যকর, অনিয়ম, কিংবা মদ পানের মত বিভিন্ন বদ অভ্যাসের কারণে টেস্টোস্টেরন হরমোন ক্ষয় হতে বাধা প্রাপ্ত হয়। যার কারণে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পেতে থাকে যার কারনে আমাদের শরীরে হরমোন এর ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং আমরা ক্ষতির সম্মখীন হয়ে পরি। তাই এই হরমোনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
টেস্টোস্টেরন হরমোন এর স্বাভাবিক মাত্রা কত?
এতক্ষণ যেহেতু আমরা জানলাম যে টেস্টোস্টেরন হরমোন যেমন মানুষের ঠিক তেমনি এর মাত্রা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয় বা অনিয়ন্ত্রিত হয় তাহলে বেশ ক্ষতি সম্মুখীন হতে হয়। যার ফলে আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে টেস্টোস্টেরন হরমোনের স্বাভাবিক মাত্রা কত বা কত মাত্রায় এ হরমোন থাকলে আমরা ধরে নিব যে টেস্টোস্টেরন হরমোন ভারসাম্য অবস্থায় রয়েছে। বিভিন্ন বিজ্ঞানের তথ্য মতে টেস্টোস্টেরন হরমোন এর যে স্বাভাবিক মাত্রা সেটি ুত প্রতি ডেসিলিটারে ৩০০ থেকে ১০০০ নেনোগ্রাম হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ প্রাকৃতিক উপায়ে রূপচর্চা যেভাবে করবেন
তবে যদি ৩০০ নেনোগ্রাম এরকম নেমে আসে তাহলে বুঝে নিবেন যে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কম রয়েছে। এবং টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে গেলে কিভাবে বৃদ্ধি করতে হয় সেটি তো উপরে আলোচনা করাই হলো সে সকল খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আপনি এর ঘাটতি পূরণ করতে পারেন।
ব্যায়াম করলে কি টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ে?
আপনারা অনেকেই জানেন ব্যায়াম করার মাধ্যমে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাধ্যমে বৃদ্ধি করা সম্ভব আবার অনেকেই এ ব্যাপারে জ্ঞান রাখেন না। সে ক্ষেত্রে চলুন আলোচনা করার চেষ্টা করব যে ব্যায়াম করলে কি আদেও টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় কি না? যেহেতু টেস্টোস্টেরন হরমোন আমাদের শরীরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে তাই এটির ক্ষরণ প্রয়োজন এবং আপনি এটি যত ক্ষয় করবেন তত বৃদ্ধি পেতে থাকবে। সে ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম হওয়া অবশ্যই জরুরি।
প্রতিদিন 6 থেকে 7 ঘন্টা ঘুম হওয়া প্রয়োজন আর শরীরের পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম না হলে এই হরমোন ক্ষরণ কমে যায়। তবে এর পাশাপাশি শারীরিক ব্যায়াম বা শরীর চর্চা করা জরুরী। কেননা শরীর চর্চা করার মাধ্যমে আমাদের শরীরে এবং টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তাই সঠিক খাদ্যাভ্যাস এর পাশাপাশি ব্যায়াম করা বা শরীর চর্চা করা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী।
বৃদ্ধ বয়সে টেস্টোস্টেরন হরমোন এর মাত্রা হওয়া উচিত
আমরা সচরাচর জানি প্রত্যেকটি জিনিসেরই ক্ষয় রয়েছে এবং সেটি যন্ত্র হোক কিংবা মানুষ। ঠিক তেমনি বৃদ্ধ বয়সে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশগুলো আস্তে আস্তে বিকল হতে শুরু করে। আর বৃদ্ধ বয়সে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। তাই আমাদের জানতে হবে বৃদ্ধ বয়সে টেস্টোস্টেরন হরমোন এর মাত্রা কত থাকা উচিত আর যদি এই হরমোন কমে যায় সেক্ষেত্রে কোন পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে। ৪০ বছর বয়সের বেশি বা এ বয়সী লোকদের টেস্ট হরমোনের মাত্রা সাধারণত ৩৫০ থেকে ৪৮০ নেনোগ্রাম এর মধ্যে থাকা উত্তম।
আরো পড়ুনঃ আপেল সিডার ভিনেগার স্বাস্থ্য উপকারিতা
তবে যদি আরও বৃদ্ধ বয়স হয়ে থাকে যেমন ধরুন ৫০ বছর বয়সী পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা সাধারণত ২১৫ নেনোগ্রাম থেকে ৮৮০ নেনোগ্রাম পর্যন্ত। তবে যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে হরমোন এর মাত্রা বৃদ্ধি করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি তেল যুক্ত খাবার কিংবা ফ্যাট আছে এমন ধরনের খাদ্য গ্রহণ করবেন। আর টেস্টোস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য যদি বজায় না থাকে সেক্ষেত্রে দ্রুত অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। আশা করছি আপনি টেস্টোস্টেরন হরমোন সংক্রান্ত সকল বিষয়ে অবগত হয়েছেন। তাই এই কার্যকরী পোস্টটি অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।