বাইনারি ট্রেডিং কি এবং বাংলাদেশে বৈধ কিনা

বাংলাদেশের ফরেক্স ব্যবসায়ীরা বাইনারি অপশন ট্রেডিং এর সাথে খুব একটা পরিচিত নয়। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের জন্যও ফরেক্সের মতো বিশ্লেষণ প্রয়োজন। বিশ্লেষণ সঠিক হলে একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মুনাফা করা যায়। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের নিয়ম, কৌশল, সতর্কতা, অর্থ ব্যবস্থাপনা মেনে চললে লাভ করা সম্ভব। বাইনারি অপশন ট্রেডিং বাংলাদেশে খুব একটা পরিচিত নয়। বিশ্বে বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের যাত্রা ২০০৮ সালে শুরু হয়। ফরেক্স বাইনারি অপশনের মতোই।

মুদ্রা ব্যবসা ২টি বাজারে সঞ্চালিত হয়। কিন্তু প্ল্যাটফর্ম ভিন্ন, নিয়ম ভিন্ন। ফরেক্স হল যেখানে লটের ভিত্তিতে মুদ্রা ক্রয় বিক্রয় করে প্রফিট করা যায়। কিন্তু বাইনারিতে একটি নির্দিষ্ট সময় ট্রেড করে ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ লাভ করা যায়। তবে একটি নিয়ন্ত্রিত ব্রোকার অ্যাকাউন্ট দিয়ে ট্রেড করা ভালো। বিশ্লেষণ করে ট্রেড করলে ভালো লাভ করা সম্ভব। কিন্তু আপনি যদি নিজের ভাল কৌশল তৈরি করেন এবং অর্থ ব্যবস্থাপনার সাথে ব্যবসা করেন তবে ধারাবাহিকভাবে লাভ করা সম্ভব।

আলোচ্য বিষয়ঃ 

অপশন ট্রেডিং কি

অপশন ট্রেডিং বর্তমানে আয় তৈরির কৌশল হিসেবে উথিত হয়েছে। ট্রেডিং অপশনের মাধ্যমে বড় এমাউন্ট অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হলেও, জ্ঞানের অভাবের কারণে এটি বিশাল ক্ষতির কারণ হতে পারে। সংক্ষেপে, অপশন ট্রেডিংয়ে লাভ যেমন বেশি, ঝুঁকিও বেশি। টাকা উপার্জন করার জন্য অপশন ট্রেডিং সম্পর্কে আপনার ভাল জ্ঞান এবং সতর্কতা প্রয়োজন। আপনাকে গতিশীল বাজারের লক্ষণগুলি বুঝতে হবে এবং বাজারটি নিচে বা উপরে যাবে কিনা তা অনুমান করতে হবে। অনেকে অপশন ট্রেডিংকে ফুল-টাইম ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেয়। অপশন ট্রেডিং সম্পর্কে একটি উদাহরণ দেওয়া যায়। যেমন : যেমন ধরুন, আপনি যদি প্রতি কেজি ধানের দাম নিয়ে আসেন ১৫ টাকা। তারপর আপনি ১৫ এর স্ট্রাইক প্রাইস সহ একটি পুট অপশন কিনতে পারেন। ফলে প্রতি কেজি ধানের দাম ১২ টাকা হলেও বিক্রি করতে পারবেন ১৫ টাকা কেজি দরে। এই ক্ষেত্রে অপশনের জন্য Main Priority হবে বীমা খরচ। এবং যদি ফসলের দাম পড়ে যায়, আপনি কেবল মেয়াদ শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে পারেন এবং লাভ ধরে রাখতে পারেন।

ভূমিকা
বাইনারি অপশন ট্রেডিং যে বৈশ্বিক মনোযোগ অর্জন করেছে বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশে বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের জন্য নিয়ন্ত্রক পরিবেশ এখনও সম্পূর্ণরূপে স্পষ্ট নয়। দেশের আর্থিক বাজারগুলি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (BSEC) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তবুও বাইনারি বিকল্পগুলি ট্রেড করার জন্য কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই৷ ফলস্বরূপ, বাংলাদেশের অনেক ব্যবসায়ী বাইনারি বিকল্পগুলি ট্রেড করার জন্য ব্রোকারদের কাছে যায়। আপনার বিনিয়োগের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ডের সাথে সম্মতি নিশ্চিত করার জন্য একটি সম্মানজনক এবং নিয়ন্ত্রিত ব্রোকার নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আমরা আপনার সুবিধার জন্য এই ট্রেডিং সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেছি। অনুগ্রহ করে এই বিভাগ থেকে এর সাথে সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং কৌশল জানতে এবং শিখতে আশা করি।

আরো পড়ুনঃ  কন্টেন্ট মার্কেটিং কি এবং ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কন্টেন্ট রাইটিং এর প্রয়োজনীয়তা

বাইনারি ট্রেডিং কি জুয়া

অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চান, বাইনারি ট্রেডিং জুয়া নাকি? আমরা আজকের পোষ্টে আপনার জন্যেএ সম্পর্কিত কিছু তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করব। তাহলে আসুন বাইনারি জুয়া কি না এ বিষয়টি স্পষ্ট আলোচনা করা যাক।

প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে জুয়া কি? আমি আশা করি আপনাদে শব্দের তাত্ত্বিক অর্থ বলতে হবে না। কারণ, আমরা সবাই কমবেশি এই শব্দটির সাথে পরিচিত। এখন প্রশ্ন হতে পারে, বাইনারি জুয়া কি? অনেকেই আছেন যারা বাইনারি ট্রেডিংকে সরাসরি জুয়ার সাথে তুলনা করেন। আমরা তর্ক করব না। আমি আপনাদের সামনে কিছু উদাহরন পেশ করব, তারপর আপনি নিজেই ভেবে দেখবেন এটাকে বাইনারি জুয়া বলা যায় কিনা?

কেস স্টাডি:
ধরুন আপনার কাছে টাকা আছে এবং আপনি সেই টাকা দিয়ে ঘোড়া রেসে ঢুকাচ্ছেন। এখন প্যাভিলিয়নে গিয়ে দেখলেন যে সমস্ত ঘোড়া অংশগ্রহণকারী তাদের বিভিন্ন code name এবং সংখ্যা একটি চার্টে ঝুলছে। দেখে মনে হচ্ছে যে কোনো ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার ঝুলে আছে। এখন বাজির পরিপ্রেক্ষিতে আপনাকে ধরে নিতে হবে যে ঘোড়াগুলির মধ্যে একটি আজকের রেসে জিতবে এবং আপনি যে ঘোড়াটির উপর বাজি ধরেছেন তা জিততে চান। আসলে সবাই এটা চায়। কেউ তো আর ইচ্ছে করে কি হারাতে চায়না? কিন্তু আজ কোন ঘোড়া জিতবে তা কেউ তা জানে না। কিন্তু সবাই কোন না কোন ঘোড়াতে টাকা লাগাবে। এখন আপনি বুক ফুলিয়ে একটি ঘোড়ায় টাকা বিনিয়োগ করলেন এবং আশা করলেন যে এই ঘোড়াটি জিতবে। রাউন্ডটি শুরু হয় এবং আপনি প্যাভিলিয়ন থেকে বের হয়ে দেখেন যে আপনার ঘোড়া দ্রুত গন্তব্যের দিকে যাচ্ছে। অবশেষে দেখা গেলো আপনার ঘোড়া জিতেছে। জয়ের জন্য অভিনন্দন। এখন আপনাকে আমাদের প্রশ্ণ হচ্ছে- আপনি কি জানতেন কোন ঘোড়া জিতবে? আপনার উত্তর যদি হয় হ্যা, তার মানে সেটি ফিক্সিং। দ্বিতীয় প্রশ্ন: আপনি কি জানতেন আজকে আপনার ঘোড়াই জিতবে? যদি আপনার উত্তর হয় না, তাহলে বুঝবো আপনি অন্ধ। তৃতীয় প্রশ্ণ: আর যদি আপনার ঘোড়া হেরে যেতো আপনি কি করতেন? উত্তর যদি হয়, জানি না তাহলেও বুঝবো আপনি অন্ধ।

এবার চলুন বাইনারি কেস স্টাডি করি :
এখন ধরুন আপনি একটি বাইনারি ব্রোকারের সাথে ট্রেডিং শুরু করার জন্য ফান্ড ডিপোজিট করেন এবং ট্রেড করতে বসেন। আপনি টার্মিনাল থেকে EUR/USD কারেন্সি পেয়ার খুলেছেন এবং এর চার্টটি দেখছেন এবং একটি এন্ট্রি করার চেষ্টা করছেন? এবার আপনাকে ৩টি প্রশ্ন করি। ১. আপনি কারেন্সি পেয়ারে SELL এন্ট্রি নিলেন কেন? ২. কারেন্সি পেয়ারের দাম কোথায় যেতে পারে? ৩. যদি এন্ট্রি লস হয় কি করবেন? এবার আসুন উত্তরগুলো দেওয়ার চেষ্টা করি আপনার উত্তর যদি হয় জানি না, তাহলে আপনি জুয়া খেলছেন। কিন্তু যদি আপনার কাছে উত্তর থাকে তাহলে ধরে নিন আপনি জুয়া খেলছেন না। কারণ আপনিতো আর আন্ধ নন। আপনি নিজেই ভাবুন আপনি কোনটি। যেকোন কারেন্সি পেয়ারে এন্ট্রি নেওয়ার সময় একজন ট্রেডার সাবধানে বর্তমান পজিশন, সেই কারেন্সি পেয়ারের আগের পজিশন যাচাই করে তারপর এন্ট্রি গ্রহণ করেন। এই যাচাই-বাছাইকে বাণিজ্য ভাষায় ট্রেডিং বলা হয়। অর্থাৎ, আপনি নিজেই ভাল করে বোঝেন যে কারেন্সি পেয়ারের দাম কোথায় যাবে এবং তারপর আপনি কেনা বা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত হিসাবে এন্ট্রি নেন এবং আপনি ধরে নিচ্ছেন যে এই কারেন্সি পেয়ারের সম্ভাব্য চলাচল হতে পারে। যারা এভাবে ব্যবসা করে তাদের ক্ষেত্রে এটাকে বাইনারি গ্যামব্লিং বলে মনে করার কোন কারণ নেই। অন্যদিকে, আপনি যদি কিছু না জেনে বা না বুঝে ট্রেড করা শুরু করেন, তাহলে আপনি ট্রেডিংকে জুয়ায় পরিণত করছেন। এখন আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি নিজেকে কেমন দেখাবেন এবং আপনি কিভাবে ট্রেড করবেন। আমি শুরুতেই বলেছিলাম, বিষয়টি নিয়ে আমরা কোনো বিতর্কে যাব না। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন আমরা কি বলতে চাইছি।

আরো পড়ুনঃ  ডিজিটাল মার্কেটিং A to Z এবং ফ্রিল্যান্সিং ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

উপসংহার

বাইনারি ট্রেডিং আপনার ব্যক্তিগত ক্ষমতা, সিদ্ধান্ত এবং বিনিয়োগ ব্যবহার নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা এজেন্সির সাথে যোগাযোগের একটি সুযোগ প্রদান করে। এটি প্রায় অন্যান্য বিনিয়োগের মতো। বিশ্ব বিনিয়োগ পদ্ধতি হতে পারে যদি এটি একটি ব্যক্তিগত পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়। বাইনারি ট্রেডিং ব্যবহার করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি প্রকৃতভাবে প্রতারণামূলক বিনিয়োগ হতে পারে তা অবশ্যই মনে রাখতে হবে। বাইনারি ট্রেডিং নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা এজেন্সির একটি বিনিয়োগ পদ্ধতি যা ব্যক্তিগত ধারণা, অভিজ্ঞতা, এবং তথ্যের উপর নেটওয়ার্ক করে। আজ আমরা শুধুমাত্র বাইনারি ট্রেডিং সম্পর্কে কিছু বলার চেষ্টা করেছি। পরের কোন আলোচনায় ইনশাআল্লাহ্ আপনাদের জানাবো কিভাবে বাইনারী ট্রেড শুরু করবেন এবং সফলভাবে টাকা ইনকাম করবেন। এজন্য আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত থাকুন। নতুন নতুন লেখা আপডেট নিয়ে আপনাদের সুবিধার্থে থাকবে নতুন নতুন পোষ্ট।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url