এ্যামাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন

অনলাইনে টাকা ইনকামের বিভিন্ন উপায় রয়েছে। এমনই একটি উপায় হল অ্যামাজন এফিলিয়েটপ্রোগ্রাম। অ্যামাজন অ্যাসোসিয়েটস, জনপ্রিয়ভাবে অ্যামাজন এফিলিয়েটমার্কেটিং প্রোগ্রাম নামে পরিচিত। প্রথমে, আপনাকে প্রোগ্রামের জন্য সাইন আপ করতে হবে এবং আপনি একটি অনুমোদন ইমেল পাবেন। তারপর আপনি আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে Amazon লিংক স্থাপন করা শুরু করতে পারেন। ব্যবহারকারী আপনার লিংক এর মাধ্যমে যত বার পন্য কিনবে, ততবার আপনি কমিশন পেতে থাকবেন। চলুন কথা না বাড়িয়ে আরো ভালো ভাবে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক কিভাবে আপনি আমাজন মার্কেটে কাজ করবেন এবং ইনকাম করবেন।

আলোচ্য বিষয়ঃ 

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি

এ্যামাজন এফিলিয়েটমার্কেটিং প্রোগ্রাম নিয়ে আলোচনা করার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক এফিলিয়েটমার্কেটিং কী। এফিলিয়েটমার্কেটিং হল এমন একটি কৌশল যেখানে ওয়েবসাইটের মালিকরা, বা একটি অনুমোদিত অংশীদার, তাদের ওয়েবসাইটে একটি অনলাইন খুচরা বিক্রেতার জন্য অনন্য পণ্য লিংক তৈরি করতে পারে৷ অধিভুক্ত অংশীদার প্রতিবারই একটি কমিশন পায় যখন কেউ লিংকটি পরিদর্শন করে এবং সে লিংককে ক্লিক করে একটি পন্য ক্রয় করে। অধিভুক্ত অংশীদার শুধুমাত্র তখনই অর্থ উপার্জন করে যখন সে তাদের লিংক এর মাধ্যমে কেনাকাটা করে। আপনি যদি কোন ওয়েবসাইট বা ব্লগের মালিক হন তাহলে এফিলিয়েটমার্কেটিং আপনার জন্য সঠিক প্রোগ্রাম। এছাড়াও, আপনি আপনার ওয়েবসাইটে যে পন্য পোস্ট করেন তা পণ্যগুলিকে লিংক করার সুযোগ দেয়। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি একটি রেসিপি ব্লগ চালান, তাহলে আপনার পেইজে হিবি জিবি পণ্যগুলির মিশ্রণ লিংক করা সম্ভবত সেরা নয়। আপনাকে আপনার পেজ অনুযায়ী পন্য নির্বাচন করে লিংক তৈরি করে প্রচার করতে হবে। তাহলে সেল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।

আরো পড়ুনঃ  অনলাইন মার্কেটিং সাইট কি? এবং অনলাইন মার্কেটিং কৌশল গুলো বিস্তারিত জানুন

এ্যামাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং কি

এফিলিয়েট পার্টনাররা তাদের পারফরম্যান্স অনুযায়ী আয় করে। অ্যামাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং অন্যান্য এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রামের মতোই। আমাজন এসোসিয়েটদের তখনই অর্থ প্রদান করা হয় যখন একজন রেফার করা ব্যবহারকারী তাদের ওয়েবসাইট থেকে Amazon-এ কেনাকাটা করে। উভয়ের জন্যই একটি লাভজনক ব্যবস্থা, কারণ বিক্রেতারা অতিরিক্ত প্রচারনা থেকে উপকৃত হন এবং বিক্রয় এবং অধিভুক্ত অংশীদাররা আর্থিক দিক থেকে উপকৃত হন। সুতরাং, তাদের অবশ্যই তাদের ওয়েবসাইট এবং বিষয়বস্তু অপ্টিমাইজ করতে হবে যাতে তারা আরও ট্র্যাফিক পেতে পারে এবং আরও বিক্রয় করতে পারে। প্রকারভেদ অনুসারে আমাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং দুই ভাবে বিভক্ত। একটি হচ্ছে পেইড মার্কেটিং অন্যটি ফ্রি মার্কেটিং। চলুন এই দুইটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

আমাজন পেইড মার্কেটিং
ওয়েবসাইট ব্যবহার করার মাধ্যমে যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা হয় সেটিই মূলত পেইড মার্কেটিং। অনেকের মনে একটা প্রশ্ন আসতে পারে, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মার্কেটিং করলে তা আবার কিভাবে পে করা হয়। হ্যাঁ, ওয়েবসাইট মার্কেটিং হল পেইড মার্কেটিং কারণ আপনি যখন ওয়েবসাইট মার্কেটিং শুরু করেন আপনাকে প্রথমে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটের জন্য আপনাকে ডোমেইন হোস্টিং কিনতে হবে। আপনি যে বিষয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন সেই বিষয়ে প্রাসঙ্গিক বিষয়বস্তু লিখুন। আপনার ওয়েবসাইট এসিও করা উচিত যাতে দ্রুত লিংক করা প্রোডাক্ট এর ট্রাফিক বৃদ্ধি পায়। যত ট্রাফিক বাড়বে আপনার ইনকাম তত বাড়বে।

আমাজন ফ্রি মার্কেটিং
ফ্রি মার্কেটিং মানে বুঝতেই পারছেন, এই মার্কেটিং করতে কোন টাকা খরচ হয় না। ফ্রি মার্কেটিং এর সুবিধা যেমন আছে কিন্তু এই মার্কেটিং ব্যবস্থা অনেকটা ধীর গতির। অডিয়েন্স রেসপন্সড হতে সময় বেশি লাগে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আমাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং করা হয়। যেমন : ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ  ইউটিউব মার্কেটিং কি ও কিভাবে ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হবেন

এ্যামাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং করা উপায়

আপনি সফলভাবে আমাজন মার্কেটিং শিখতে বা আবেদন করতে চাই ভালোভাবে আমাদের লেখা ধাপগুলো অনুসরন করুন। আশা করা যায় সহযেই আপনাদের এই বিষয়ে ধারনা দিতে পারবো। আমাজন এফিলিয়েটে আবেদন করতে গেলে নিন্মোক্ত নিয়ম অনুসারন করুন: প্রথমেই আপনাকে আমাজন এফিলিয়েট সাইটে প্রবেশ করতে হবে। তারপর সাইন আপ করা লাগবে। আর যদি পূর্বের কোন একাউন্ট থেকে থাকে তাহলে লগ-ইন করুন। তারপর আপনার একাউন্টে সম্পুর্ণ তথ্য আপলোড দিন যেমন, যোগাযোগ ও ঠিকানার তথ্য ইত্যাদি। এরপর আপনার ওয়েবসাইট থাকলে ওয়েবসাইটের লিংক, আর ওয়েবসাইট না থাকলে সোশ্যাল মিডিয়ার লিংক আমাজন এফিলিয়েট সাইটে লিখুন। আপনি আপনার ওয়েবসাইটে ৫০টি লিংক যোগ করে আমাজন এর পন্য প্রচার করতে পারবেন। তারপর আপনাকে একটি স্টোর আইডি বেছে নিতে হবে ঠিক আপনার ওয়েবসাইটের মত। এটি আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

এ্যামাজন এফিলিয়েট প্রোগ্রামের কৌশল

আমাজন এফিলিয়েটের জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি ট্রাফিক, যাদের ওয়েবসাইট আছে। ট্রাফিক বৃদ্ধি যত বেশি হবে সেল তত বৃদ্ধি পাবে ফলে আপনার কমিশনও বাড়তে থাকবে। ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে নিশ তৈরী করা উচিৎ। তাছাড়াও ফ্রি মার্কেটিং যেগুলো আছে সেগুলো ব্যবহার করে কিভাবে মার্কেটিং করবেন তার কৌশল চলুন আলোচনা করা যাক।

নিশ ব্যবহার করে এ্যামাজন মার্কেটিং
এই মডেলে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে, যদি এটি টপিকাল হয় তবে এটি একটি নিশ সাইট বলা যেতে পারে। নিশ মানে ছোট শ্রেণী। উদাহরণস্বরূপ, খেলাধুলা এবং আউটডোর একটি খুব বড় বিভাগ, কিন্তু ব্যাডমিন্টন একটি নিশ। এই ধরনের একটি থিমযুক্ত ওয়েবসাইট তৈরি করে আপনি অ্যামাজন পণ্য বিক্রি করতে পারেন। ব্যাডমিন্টন সম্পর্কে একটি বিশেষ সাইট তৈরি করে, আপনি নিবন্ধ সহ ব্যাডমিন্টন সম্পর্কিত সমস্ত ধরণের পণ্য বিক্রি করতে পারেন। এবং আপনি যদি আরও বিস্তৃত নিশ নিয়ে কাজ করতে চান তবে আপনি একই বা অনুরূপ জিনিস একসাথে নিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি শীতকালীন ক্রীড়া নিয়ে কাজ করেন তবে আপনি শীতকালে খেলা সমস্ত কিছুতে কাজ করতে পারেন। যাইহোক, নতুনদের জন্য মাল্টি-নিচ নিয়ে এগিয়ে না যাওয়াই ভালো। একক নিশে কাজ করুন, আপনি যদি ভাল সাফল্য পান তবে আপনি যা চান তা করতে পারেন। অনেক লোক অন্যদের কাছ থেকে তৈরি সাইট কিনতে পছন্দ করে, পুরো প্রক্রিয়াটি নিজে না শিখে। প্রথম ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত বোকামি।

ইউটিউব ব্যবহার করে এ্যামাজন মার্কেটিং
ইউটিউবের মাধ্যমেও অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। আমাদের দেশে জনপ্রিয় না হলেও বাইরের দেশে এটি অনেকেই করছেন। যদি কোয়ালিটি ভিডিও নিশ্চিত করা না যায়, তাহলে ইউটিউবের মাধ্যমে অ্যামাজনের সাথে কাজ না করাই ভালো। কারণ অ্যামাজন যখন চ্যানেলটি পর্যালোচনা করে, যদি এটি নিম্নমানের ভিডিওর কারণে অ্যাকাউন্টটি ব্যান করে তবে কিছুই করার থাকবে না। কিন্তু আপনি যদি ভয়েস ওভার দিয়ে ভালো মানের ভিডিও বানাতে পারেন বা ক্যামেরার সামনে নিজে কথা বলতে পারেন, তাহলে আপনাকে স্বাগতম।

এ্যামাজন স্টোর ব্যবহার করে আমাজন মার্কেটিং
এক্ষেত্রে আপনার একটি ওয়েবসাইট লাগবে যা সম্পূর্ণ ই-কমার্স সাইটের মতো। আপনি এখানে শুধুমাত্র Amazon পণ্যগুলি দেখাতে পারেন, লোকেরা সাধারণ ই-কমার্স সাইটের মতো পণ্য কার্ট নিতে পারে। পেমেন্ট পেজে গেলে তাকে অ্যামাজনের পেমেন্ট পেজে নিয়ে যাওয়া হবে। তিনি সেখানে অর্থ প্রদান করবেন এবং আপনি কমিশন পাবেন। আমাজন স্টোর টাই ওয়েবসাইট প্রধানত অর্থ প্রদানের ট্রাফিকের সাথে কাজ করে। অতএব, আপনি যদি অর্থপ্রদানের লক্ষ্যে বস না হন তবে আপনার এই ধরণের সাইটের সাথে কাজ করা উচিত নয়। আমি উপরে উল্লিখিত পদ্ধতিগুলির মধ্যে, একটি নিশ সাইট তৈরি করা সবচেয়ে সহজ এবং সেরা পদ্ধতি বলে মনে করি। এইভাবে আমি এটা করি এবং এভাবেই ম্যাক্সিমাম অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার কাজ করে।

আরো পড়ুনঃ  আপওয়ার্ক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করবেন

উপসংহার

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটি অনলাইন ব্যবসা। যেকোনো ব্যবসার মতো আপনাকে সময়, শ্রম এবং অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। একবিংশ শতাব্দীতে এই ব্যবসার দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। আপনি যদি আপনার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইটটি একবার সেট আপ করতে পারেন তবে আপনি খুব অল্প পরিশ্রমে এটি থেকে নিয়মিত আয় করতে পারেন। এটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর অন্যতম প্রধান সুবিধা। এখান থেকে প্যাসিভ ইনকাম করা যায়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url